বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ছোট-বড় ভূমিকম্পগুলো বড় ধরনের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হতে পারে।
ঢাকা, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম শহরগুলো বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরের চেয়ে সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত ও মিয়ানমার টেকটোনিক প্লেট গেছে, যা দীর্ঘদিনের সঞ্চিত শক্তি হঠাৎ মুক্ত করে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারে।
এ ধরনের ভূমিকম্প হলে লাখ লাখ প্রাণহানি এবং ঢাকা শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বুয়েট ও সরকারের একটি যৌথ সমীক্ষায় দেখা গেছে, সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়বে, যেখানে তৈরি হবে সাত কোটি টন কংক্রিটের স্তূপ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘৭ মাত্রার ভূমিকম্প যদি সীমান্ত এলাকায় হয় তাহলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বাংলাদেশকে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতি হবে। ঢাকায় ক্ষয়ক্ষতি হবে কারণ ঢাকার ভবনগুলো বেশিরভাগ ঝুঁকিপূর্ণ।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘আমাদের দেশের আশপাশ দিয়ে তিনটি টেকটোনিক প্লেট গেছে। যেগুলোর সংযোগস্থল সীমান্তের আশপাশে। আমাদের অবস্থান ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেটে, আমাদের উত্তরে হিমালয় পড়েছে ইউরেশিয়ান প্লেটে আর আমাদের পূর্বে হচ্ছে মিয়ানমার মাইক্রো প্লেট। সবগুলো প্লেটই আমাদের কানেক্টেড এবং সক্রিয়। এগুলোর মুভমেন্ট আছে। প্লেটগুলো প্রতি বছর ৫ সেন্টিমিটার মুভমেন্ট করে। অর্থাৎ, আমরা প্রতি বছর ৫ সেন্টিমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মুভমেন্ট করছি। একইভাবে পুরো পৃথিবীও মুভ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাছে শুধু ইক্যুইপমেন্টস আছে। শুধু ইক্যুইপমেন্টস দিয়ে হবে না। কারণ ভূমিকম্পের সময় দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে, যা শুধুমাত্র ইক্যুইপমেন্টস দিয়ে সম্ভব নয়।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে এবং প্রস্তুতি নিতে হবে।